রুবেল মজুমদার।
পবিত্র ঈদুল আজহা আর কয়েকদিন বাকী।তাই কোরবানীকে সামনে রেখে জমে উঠেছে কুমিল্লার পশুর হাটগুলো। ক্রেতারা সাধ্যমতে পছন্দের পশুটি কিনছেন। তবে বেশির ভাগ হাটেই দেখা গেছে মাঝারি গরুর ব্যাপক চাহিদা।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে জেলা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী দেড়কোটা বাজারে হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকায় এখন যেসব ক্রেতা আসছেন, তারা অধিকাংশই পশু কিনে ঘরে ফিরছেন। এ কারণে বুধবার সকাল থেকে বিক্রি বেড়েছে এ বাজার ।
এ চিত্র দেখা যায় নগরীর নেউরা বাজারে, এ বাজারে প্রথমদিনে বড় গরুর পাশাপাশি ছোট গরুগুলো ছিলো দেখার মত। সে হিসেবে বড় গরুর দামটাও একটু চড়া। তবে এ বাজারে ব্যাপক মাঝারি গরু চাহিদা বেশি দেখা গেছে।তবে খামারীরা ঈদের কয়েকদিন আগেই বেশ শঙ্কায় ছিলেন ভারতীয় গরু প্রবেশ নিয়ে ।অধিক হারে ভারতীয় গরু প্রবেশ না হাওয়ার কুমিল্লার সীমান্তে দিয়ে কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করেছে খামারী ।
এবার প্রতিটি পশুর হাটে বিপুল পরিমাণ গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে আসছেন বিক্রেতারা।মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি উল্লেখ করে বিক্রেতারা জানান, বাজারে নানা আকারের গরু থাকলেও মাঝারি গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
নগরীর মাসুদ নামের এক বিক্রেতা বলেন, চারটি বড় গরু নিয়ে এসেছি। এখন পর্যন্ত ১ট বেঁচতে পারছি। বড় গরুর চাহিদা কম। হাতেগোনা কিছু মানুষ বড় গরু কিনছেন। মানুষ এসে দামাদামি করছেন ঠিকই কিন্তু নিচ্ছেন মাঝারি গরু।দেখি বাজার তো আরো আছে কয়েকদিন।আশা করছি গরুগুলো বিক্রি করতে পারবো ।
জেলা চৌদ্দগ্রাম ঐতিহ্যবাহী দেড়কোটা বাজারে ইজারাদার বলেন, এ বছর গরুর দাম বেশি হওয়ার অভিযোগ করছেন ক্রেতারা। এ জন্য এখন পযন্ত বিক্রির পরিমাণ অন্যান্য বছরের তুলনায় কম।তবে খামারিরা গরু আনতে এ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে ।
তিনি বলেন, আমরা ব্যাপারীদের সঙ্গে কথা বলছি, যেন তারা পরিস্থিতি বিবেচনায় অল্প মুনাফায় গরু বিক্রি করে দেন। তাতে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয় লাভবান হবেন।
এদিকে দেড়কোটা বাজারের ইয়াকুব নামের অপর এক ব্যবসায়ী বলেন, বিগত বছর লাভ ভালো না পাওয়ায় একটি গরু ৩ লাখ টাকা বলা সত্ত্বেও তিনি গরুটি বিক্রি না করে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। এক বছর টানার পর এবার সেই গরুটি বাজারে নিয়ে এসেছেন তিনি। এবার গরুটির দাম সর্বোচ্চ ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। তার লক্ষ্যমাত্রা এটি তিনি পাঁচ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন ।
হাটমুখী কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথম দিকে তারা পশু কিনতে না আসলেও এখন বাধ্য হয়েই ছুটছেন হাটে। কিছু ক্রেতা আবার পশুর দাম যাচাইয়ের জন্য এ হাট ও হাট করছেন। তাদের অনেকেই জানান শহুরে লোকদের জায়গা সংকট থাকায় শেষভাগে গরু কিনে থাকেন তারা। এবছর খাশির বাজার মন্দা হওয়ায় অনেক ক্রেতাকে খাসিও কিনতে দেখা গেছে।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন , দালাল চক্রের খপ্পরে কোনো ব্যবসায়ী বা ক্রেতা যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য তারা প্রতিটি হাটে পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প বসিয়েছেন। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি ব্যাংক তাদের সহযোগিতা করছে।ক্রেতারা যাতে পশু নিয়ে সুষ্ঠুভাবে বাড়ি ফিরতে পারেন এবং মহাসড়কে যাতে যাত্রাপথে দূরপাল্লার যাত্রীদের কোনো বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য পুলিশ টহল বাড়ানো হয়েছে।
উল্লেখ্য কুমিল্লায় কোরবানীর পশুর চাহিদা ২ লাখ ৪৮ হাজার। মজুদ আছে ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৩২টি। এবারের ঈদের জন্য স্থায়ী পশুর হাট আছে ৭৫টি এবং এ পর্যন্ত অস্থায়ী হাটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ৩৭৯টি ।
আপনার মতামত লিখুন :