কুমিল্লা নগরীর ৩০০ বছরের পুরনো ‘উজির দিঘি’। জেলা পুলিশ সুপারের সরকারি বাংলো ও সার্কিট হাউজ সীমানা লাগোয়া এই দিঘি ভরাটের অভিযোগ উঠেছে।গত কিছু দিন ধরে পানি নিষ্কাশনের কয়েকটি মেশিন লাগিয়ে দিঘির পানি অপসারণ করে শুকিয়ে অর্ধেকে নিয়ে আসা হয়। বিষয়টি জানার পর পরিবেশবাদী ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বিকালে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন দিঘির পানি সেচের মেশিন বন্ধ করে দিয়েছে।এর আগেও নগরীর আরও কয়েকটি জলাশয় ভরাট করা হয়। একের পর এক পুকুর-জলাধার ভরাটের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন নগরীর নানা শ্রেণি-পেশার নেতৃবৃন্দ। েবিভিন্ন সূত্র জানায়, পানি নিষ্কাশনের পর মাটি ভরাট করে দিঘিতে কমিউনিটি সেন্টার, কফি হাউস ও মার্কেট স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দিঘির পানি প্রায় শুকিয়ে ফেলা হয়েছে। এর দক্ষিণ পাড়ে সেচের মেশিন বসানো রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই দিঘির পানি তারা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করেন। এটি ভরাট হয়ে গেলে তারা বেকায়দায় পড়বেন।এ বিষয় জানতে চাইলে কুমিল্লা পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সভাপতি অধ্যাপক মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পুকুর ও দিঘি ভরাট করে কুমিল্লা নগরীর পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। জলাবদ্ধতা বাড়ছে। আগুন নেভানোর কাজে পানির সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। অবিলম্বে দিঘি ভরাট বন্ধ করা প্রয়োজন। এদিকে দিঘিটি ভরাট হলে রাজবাড়ি ও মনোহরপুরসহ আশপাশের বাসিন্দারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। একই সঙ্গে কুমিল্লা সার্কিট হাউস ও জেলা পুলিশ সুপারের বাস ভবনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে।অভিযোগের বিষয়ে এ কে এম মহসিন বলেন, ‘আমরা আইনের বাইরে নই। দিঘি ভরাট করা হচ্ছে না। পূর্ব পাড়ের ময়লা দিঘিতে প্রবেশ করছে। তেমন মাছ উৎপাদন হচ্ছে না। দিঘির পাড় বাঁধার জন্য পানি কমানো হচ্ছে। এছাড়া এখানে পানির উপরে বিনোদনমূলক কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে।’পরিবেশ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক শওকত আরা কলি বলেন, ‘আমরা পানি সেচের মেশিন বন্ধ করে দিয়েছি। দিঘির মালিককে নোটিশ করেছি। পুকুর-দিঘি ভরাটেরও কোনো সুযোগ নেই। ’কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘নগরীর ভেতরের দিঘি ভরাটের কোন সুযোগ নেই। তারা দিঘির পানি কমানোর অনুমতি চান। পানি ময়লা হয়ে গেছে বলে জানান। তাই অনুমতি দিয়েছি। ’
আপনার মতামত লিখুন :