
নিজেস্ব প্রতিবেদক।।
পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিক কে হেনস্তার ঘটনায় আদালতে মামলা দ্বায়ের করা হয়েছে। আজ ২২/৪/২৩ইং (বুধবার) কুমিল্লা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালত -২ এ বাদী হয়ে মামলাটি করেন দৈনিক মুক্ত খবর পত্রিকার কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি ভুক্তভোগী সাংবাদিক আবু বকর সিদ্দিক। ১নং আসামি করা হয় আব্দুল মোমেন, পিতা- মৃত সাহেব আলী, সাং- জগতপুর পূর্ব পাড়া, থানা- বুড়িচং, জেলা- কুমিল্লা, ২নং আসামি মাহবুব (ড্রেজার ব্যবসায়ী ), পিতা- অজ্ঞাত, সাং- আসাদনগর পূর্বপাড়া, থানা- ব্রাক্ষণপাড়া, জেলা- কুমিল্লাসহ অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জনকে। যাহার মামলা নং – ১৫৪/২৩। আদালত মামলাটি জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ওসি ডিবি) কে তদন্ত করতে নির্দেশ দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১৬/৩/২৩ইং ( বৃহস্পতিবার ) তারিখে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার জগতপুর এলাকার খালের পাশ দিয়ে লম্বা ড্রেজারের পাইফ লাগিয়ে চলছে প্রকাশ্যেই অবৈধ ড্রেজার দিয়ে মাটি কর্তনের ব্যবসা এমন সংবাদ পেয়ে সাংবাদিক আবু বকর সিদ্দিক সন্ধ্যা অনুমান সাড়ে ৬টার সময় ছুটে যান সেখানে। কিন্তু বিপত্তি ঘটে সেখানেই, সাংবাদিকতার অন্তরালে ড্রেজার ব্যবসায়ী মোমিনের। ড্রেজারের প্রকৃত মালিক মাহবুব এর ড্রেজারের মালামাল রাখার স্থানে তার সঙ্গে কথা বলার সময় প্রথমে উপস্থিত হন এনামুল হক নামে এক ছাত্রলীগের স্থানীয় নেতা। এরপর অবৈধ ড্রেজার মালিক মাহবুব এর পক্ষে প্রথম দিকে সাফাই গাইতে থাকেন তিনি।
একপর্যায়ে সেখানে উপস্থিত হন ৮-১০ জন সন্ত্রাসীদের নিয়ে আব্দুল মোমেন নামে এক ব্যক্তি। এসে কোন কথা না শুনেই নিজেকে উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে রিপোর্টারকে এলোপাথাড়ি চড়থাপ্পর দিয়ে সঙ্গে থাকা ৮-১০ জনের সহযোগিতায় ক্যামেরা, এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ও পেশাগত পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) জোরপূর্বক কেড়ে নিয়ে ঘটনাস্থলেই আব্দুল মোমেন ক্যামেরা ভাঙচুর করেন। এরপর বিশৃঙ্খলা করার উদ্দেশ্যে গণজমায়েত করার জন্য অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে আব্দুল মোমিন মামলার ভয় দেখিয়ে সাংবাদিক এর কাছে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং এ ঘটনায় নিউজ প্রকাশ বা আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়ার শর্তে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে বলেন। ভুক্তভোগী সাংবাদিক আবু বকর সিদ্দিক তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামিদের পরস্পরের সহযোগিতায় আব্দল মোমেন সাংবাদিককে প্রাণে মেরে ফেলবে মর্মে হুমকি দেয় এবং ড্রেজার ব্যবসায়ী মাহবুব ও সঙ্গে থাকা ৮-১০ জনের সহযোগিতায় আব্দুল মোমেন সাংবাদিককে রাত সাড়ে ৮টার সময় বুড়িচং থানায় সিএনজি যোগে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যান। এরপর থানার অফিসার ইনচার্জ এর কাছে মোবাইল ও আইডি কার্ড দিয়ে আব্দুল মোমিন বলেন সাংবাদিক আবু বকর সিদ্দিক প্রকৃত সাংবাদিক কি না তা যাচাইবাছাই করতে এবং সে ড্রেজার ব্যবসায়ী মাহবুব এর নিকট চাঁদা চেয়েছে। কর্তব্যরত ওসি সাহেব পরস্পরের বক্তব্য শুনে সাংবাদিক আবু বকর সিদ্দিক এর বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে সাংবাদিক আবু বকর সিদ্দিককে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন।
এ ঘটনার পর এনামুল হক নামে ওই ছাত্রলীগের নেতা সাংবাদিক আবু বকর সিদ্দিককে ফোন দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং চায়ের দাওয়াত দেন তিনি।
বুড়িচং উপজেলা প্রেসক্লাবের গঠনতান্ত্রিক উপায়ে কমিটির উপদেষ্টা পরিষদের ৪জন সম্মানিত সদস্য যথাক্রমে, প্রধান উপদেষ্টা কুমিল্লা-৫ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট আবুল হাশেম খান, উপদেষ্টা হিসেবে কুমিল্লা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মাহবুবুর রহমান, কুমিল্লা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও আরটিভির স্টাফ রিপোর্টার গোলাম কিবরিয়া, কুমিল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ও মাইটিভির কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি আবু মুসা রয়েছেন। সেই কমিটির নির্বাচিত সভাপতি হচ্ছেন দৈনিক নয়াদিগন্তের প্রতিনিধি কাজী খুরশেদ আলম, সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন দৈনিক আজকের পত্রিকার রিপোর্টার জহিরুল হক বাবু, সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম জাবির, সহ-সভাপতি হিসেবে আরটিভির প্রতিনিধি সোহরাব সুমন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দৈনিক সমকালের ও কুমিল্লার স্থানীয় দৈনিক রুপসী বাংলার প্রতিনিধি জাকির হোসেনসহ পেশাগত ১৯ সাংবাদিকের কমিটি রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে আব্দুল মোমেন নামে ওই ব্যক্তি নিজেকে প্রেসক্লাবের সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে আসছেন এবং বিভিন্ন জায়গাই আইনলঙ্ঘন করে প্রভাব বিস্তার করে বেড়াচ্ছেন। এদিকে এ ঘটনায় বুড়িচং উপজেলায় কর্মরত পেশাদার সকল সাংবাদিকরা আব্দুল মোমেনের এমন কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন এবং তার বিচারের দাবি জানিয়েছেন।
মোস্তাফিজ /কুমিল্লা জার্নাল
[sharethis-inline-buttons]
আপনার মতামত লিখুন :