কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
টানা কয়েকদিনের বৃষ্টি আর উজানের ঢলে ডুবে গেছে কুমিল্লার গোমতী চরের বাড়ি-ঘর,তলিয়ে গেছে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সবজি। জেলার বুড়িচং উপজেলার ভান্তি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ডুবে যাওয়া সবজি খেতে মুলা তুলতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন সফিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, ৪০ শতক জমিতে মুলা চাষ করেছেন। তার ব্যয় হয়েছে ২০ হাজার টাকা। তার মতো ওই এলাকায় অন্তত ২০ জন কৃষক চরে মুলা, ঢেঁড়শ, পুইশাক, লাউ, চাল কুমড়ো, চিচিঙ্গা, বরবটি চাষ করেছেন।
আদর্শ সদর উপজেলার জালুয়াপাড়া ও সুবর্ণপুর এলাকার কৃষক লালমিয়া ও হোসেন মিয়া বলেন, ২০০ শতক জমিতে শসা চাষ করেছেন। এতে তার বিনিয়োগ ছিলো ৮০ হাজার টাকা। তার মতো নদীর ওই চরে আরো অন্তত কুড়িজন কৃষক শসা চাষ করেছেন। সবার শসার মাচা পানিতে তলিয়ে গেছে।
গোমতী নদী কুমিল্লা জেলার সদর, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বার, মুরাদনগর, দাউদকান্দির উপর দিয়ে বয়ে গেছে। এসব উপজেলার অন্তত কুড়ি হাজার সবজি চাষি আছে। তাদের সবার দশা একই রকম। চরের ফসল হারিয়ে বাকরুদ্ধ। তাদের দাবি গোমতীর পানি বৃদ্ধিতে তাদের প্রায় দশ কোটি টাকার ফসল বিনষ্ট হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, গতকাল রোববার থেকে গোমতীর পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। সোমবার গোমতীর চর তলিয়ে যায়। জরিপ করে দেখবো কতজন কৃষকের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবো।
এদিকে গোমতীর পানি বৃদ্ধি নিয়ে দুপাড়ের বাসিন্দারা ভীষণ দুঃচিন্তায় রয়েছে।
ডুবে গেছে কুমিল্লার গোমতী চরের অনেকের বাড়ি-ঘর। চরের জগন্নাথপুর এলাকার বাসিন্দা জসিমের বসতঘরে কোমর পর্যন্ত পানি। তাকে ঘরের মালামাল সরাতে ব্যস্ত দেখা গেছে।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন, সোমবার দুপুর ১ টা পর্যন্ত গোমতীর পানি বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে পানির উচ্চতা ৯.৯ মিটার। যেখানে বিপৎসীমা হিসেবে ধরা হয়েছে ১০.৭৫ মিটার। পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পেতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :