• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১২ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১৪ মার্চ, ২০২২
সর্বশেষ আপডেট : ১৪ মার্চ, ২০২২
Designed by Nagorikit.com

 গোমতী নদী দখল ও দূষণে বিপর্যস্ত

কুমিল্লা জার্নাল

নিউজ ডেস্ক||

কুমিল্লার খরস্রোতা গোমতী নদী এখন দখল, দূষণে বিপর্যস্ত। নদীর কোথাও জলের ক্ষীণধারা, কোথাও চর। নদী থেকে বালু উত্তোলন ও অবাধে মাটি কেটে পানি দূষিত করা হচ্ছে।

নদীর বাঁধের ভেতরের গাছগাছালি কেটে ফেলায় পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। যত্রতত্র মাটি কাটায় নদীর গতিপথও ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে। এ অবস্থার মধ্য দিয়ে আজ সোমবার আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস পালিত হচ্ছে। প্রতিবছর ১৪ মার্চ দিবসটি পালন করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লা আঞ্চলিক শাখার উদ্যোগে আজ সকাল ১০টায় গোমতী নদীর তীরে অবস্থিত সংরাইশ সালেহা উচ্চবিদ্যালয়ে উপস্থিত বক্তৃতার আয়োজন করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার কটকবাজার থেকে দাউদকান্দি উপজেলার কলাতিয়া পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদী। এর মধ্যে শহরের গা ঘেঁষে রয়েছে সাড়ে ৪ কিলোমিটার ও শহরের ভেতরের সাড়ে ৫ কিলোমিটারসহ মোট ১০ কিলোমিটার। ষাটের দশকে পাকিস্তান সরকার কুমিল্লা শহরকে রক্ষা করতে একটি বাঁধ নির্মাণ করে। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে গোমতী নদী দুই ভাগে বিভক্ত হয়। শহরের ভেতরে রয়েছে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ পুরাতন গোমতী নদী। বাঁধ থাকায় এ অংশে পানি থাকে সব সময়। কিন্তু মূল নদীতে পানির গতিধারা কম থাকে।

গতকাল রোববার গোমতী নদীর পাড় ঘুরে দেখা গেছে, নদীর উত্সস্থলের কাছাকাছি বাংলাদেশের জগন্নাথপুর ইউনিয়নের কটকবাজার, বিবিরবাজার এলাকায় পলি জমে পানির ক্ষীণধারা বইছে। আলেখারচরে বালু উত্তোলনের জন্য নদীর মধ্যে ড্রাম দিয়ে আড়াআড়িভাবে পানিপ্রবাহ বন্ধ করা হচ্ছে। একই অবস্থা মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ সেতুর পূর্ব পাশে। সেখানে নদীর মধ্যে ছেলেরা ফুটবল খেলছে। নদীর মাঝখান দিয়ে মানুষ হেঁটে এপার থেকে ওপারে যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, উজানে ভারতে নদীর মধ্যে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নেওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ অংশে পানি আসছে না। যে কারণে নভেম্বর থেকে মে পর্যন্ত নদীতে পানি একেবারেই কম থাকে, এতে সেচকাজ ব্যাহত হয়। পুরাতন গোমতী নদীর চানপুর এলাকায় নদীর মধ্যে ময়লা–আবর্জনা ফেলে রাখা হয়েছে। নদীর পাড়ে শত শত দখলদার।

কুমিল্লা পাউবোর পরিকল্পনা ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ‘এখন এ নদী নিয়ে নতুন করে সমীক্ষা হচ্ছে, গবেষণা চলছে। পুরাতন গোমতী নদীর মধ্যে ময়লা–আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ভরাটের উদ্দেশ্যে নদীর পাড়ের বাসিন্দারা এসব করছে। আমরা তালিকা করেছি। কিন্তু দখলদার ও দূষণকারীরা বহাল তবিয়তে আছে।’

বাপা কুমিল্লা আঞ্চলিক শাখার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর বলেন, গোমতী নদীকে দুই দশক ধরে গিলে খাচ্ছেন রাজনৈতিক নেতারা। তাঁরা নদীর কিচ্ছু রাখেননি। বালু, মাটি, নদীর বাঁধ, গাছপালা, সড়ক—সবই ধ্বংস করেছেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ‘গোমতী নদী থেকে মাটি কাটা চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি, নিচ্ছি। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা ও সাজা দেওয়া হচ্ছে।’

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. মনিরুল হক বলেন, ‘পুরাতন গোমতী নদীর বেশির ভাগ এলাকা কুমিল্লা নগরের মধ্যে। এর পাঁচটি অংশে পাকা সড়ক হয়েছে। আমরা সড়ক সরিয়ে সেখানে হাতিরঝিলের মতো উড়ন্ত সেতু করব। পুরো নদীর সৌন্দর্য বর্ধন করব। ময়লা–আবর্জনা ফেলার জন্য নির্ধারিত ডাস্টবিন আছে। মানুষ সেখানে ময়লা না রেখে নদীতে ফেলে।’

আরও পড়ুন

  • কুমিল্লা এর আরও খবর