চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আবদুল আজিজ নামে এক বেলজিয়াম প্রবাসীর জায়গা দখল করে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগে ভুক্তভোগী পরিবার কুমিল্লার আদালতে মিজানুর রহমানকে প্রধান আসামী ও বদিউল আলম খোকন এবং মোহাম্মদ হোসেনসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্ত মিজানুর রহমান সেনাবাহিনীর সার্জেন্ট পদে কর্মরত রয়েছেন বলে জানা গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের মান্দারিয়া গ্রামের পূর্বপাড়ায়। শনিবার (০২ নভেম্বর) বিকালে তথ্যটি নিশ্চিত করে চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ এ.টি.এম আক্তার উজ জামান বলেন, আদালতের নির্দেশে ঘটনাটি তদন্তে থানা পুলিশ কাজ করছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মামলায় ভুক্তভোগী পরিবার উল্লেখ করেন, উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের মান্দারিয়া পূর্ব পাড়ার মৃত আনা মিয়ার ছেলে মো: মিজানুর রহমান, তার চাচাতো ভাই মৃত বুদু মিয়ার ছেলে বদিউল আলম খোকন ও তার ছেলে মো: হোসেন কতিপয় বহিরাগত লোকজন সহ একই এলাকার বেলজিয়াম প্রবাসী আব্দুল আজীজ এর অনুপস্থিতিতে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া তার ফসলি জমি ও জলাশয়ের পাশে নির্মিত সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে জোরপূর্বক জায়গা দখল করে মাটি ভরাট করে নিজ বাড়ীর যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণ করেন। ভুক্তভোগীর পক্ষে তার পরিরাবের লোকজন এতে বাধা দিলে সংঘবদ্ধ মিজান গং তাদের উপর আক্রমণের চেষ্টা চালায়। পরে স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংশার আশ্বাস পেয়ে উভয় পক্ষ শান্ত হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগির ছোট ভাইয়ের স্ত্রী রেহেনা আক্তার রীমা বাদী হয়ে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত ও সামাজিক গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কথা উপেক্ষা করে গত ২৮ অক্টোবর একই কায়দায় আবারও মিজান ও খোকন গং আব্দুল আজীজের ওই জায়গায় বস্তা ভর্তি মাটি ও ইটের সুরকি ফেলে পূনরায় ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করে। আদালতের নির্দেশে ও ভুক্তভোগিরদের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের একটি টিম বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভুক্তভোগির বড় বোন রাহেলা বেগম ও ফুফাতো ভাই মো: আব্দুল মালেক বলেন, মিজানুর রহমান সেনাবাহিনীর চাকুরির প্রভাব খাটিয়ে প্রবাসী আব্দুল আজীজ ও তার চাচাতো ভাইয়ের জায়গা জোরপূর্বক দখল করে মিজান ও খোকন গং অবৈধভাবে নিজ বাড়ীর চলাচলের রাস্তা নির্মাণ করে। অথচ তাদের বাড়ীতে যাতায়াতের জন্য পুরনো একটি রাস্তা রয়েছে। যাহা ওই বাড়ীর সকলে ব্যবহার করে আসছে। জমি দখল ও রাস্তা নির্মাণের বিষয়ে কেউ কিছু বললে মিজান সেনাবাহিনীর ভয় দেখায় এলাকাবাসীকে। তার এসব অনৈতিক কর্মকান্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুনাম নষ্ট হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত মিজানুর রহমান বলেন, আমার চাচাতো ভাই আবদুস সাত্তার ও শহিদুল ইসলামের সাথে আবদুল আজিজ গংদের বংশগত ভাবে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ জায়গার উপর দিয়ে তারা চলাচল করার জন্য একটি রাস্তা নিমার্ণ করে। নির্মাণকালীন সময়ে গ্রামবাসী অন্যান্যদের মত আমিও দর্শক হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। আমি সেনাবাহিনীর কোন প্রভাব বিস্তার করিনি। আমার সাথে তাদের কোন বিরোধও নেই। শুধুমাত্র সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমার নামে অপপ্রচার করছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চৌদ্দগ্রাম থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক জয়নাল বলেন, আদালতের নির্দেশে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জায়গা দখল করে চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণের সত্যতা পাই। তদন্ত সাপেক্ষে আদালতে যথাযথভাবে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :