মোঃ জুয়েল রানা, তিতাস প্রতিনিধিঃ
কর্তৃপক্ষের অবহেলা, উদাসিনতা ও তত্বাবধানের অভাবে কুমিল্লার তিতাসের দোতলা বিশিষ্ট টেলিফোন অফিসটি বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। বুঝার কোন উপায় নাই যে এটি একটি অফিস। মনে হয় যেন কোন একটি পরিত্যক্ত প্রতিষ্ঠান। নেই কোন সাইনবোর্ড ও নেমপ্লেট।
সরজমিনে গিয়ে দেখায়, ভবনটির সামনে রয়েছে ভাঙ্গাচুরা পরিত্যক্ত একটি টিনশীড পাকা ভবন। তার চারপাশে ময়লা আবর্জনা। মুল ভবনের নীচ তলায় দেখা যায় একটি প্লাস্টিক চেয়ারের উপর রাখা আছে একটি টেলিফোন রিসিভার ও দোতলায় রয়েছে ১টি প্লাস্টিক চেয়ার, ১টি পুরনো টেবিল ও ১টি ঘুমানোর চকি। এছাড়া আর কিছুই দেখা যায়নি। ফাকা পরে আছে দোতলাজুড়ে পুরো অফিসটি।
এছাড়াও এই অফিসটির সেবা ও বেহাল অবস্থার দৃশ্য তুলে ধরে গত কয়েকদিন পূর্বে ফেইসবুক লাইভে আসেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহসিন ভূইয়া। সেখানে দেখা যায় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ আহমেদ ফকির, ইউপি চেয়ারম্যান নুর নবী টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এলাকাবাসী আক্ষেপ করে জানান, ভবনের পাশে পরিত্যক্ত একটি টিনশীড পাকা ভবনে হরহামেশাই চলছে মাদকসেবীদের আড্ডা, সীমানা প্রাচীর নীচু হওয়ায় ওয়াল টপকে মাদকাসক্তরা আসাযাওয়া করতে পারে সহজেই। তাছাড়া এই অফিসের গেটের তালা কখন খোলা হয় বা বন্ধ হয় তা সচরাচর চোখে পড়ে না। অযোগ্য হয়ে পড়েছে ব্যবহারের।
কোন এক সময় উপজেলার সরকারি-বেসরকারি অফিসে কিছু সংযোগ থাকলেও এখন বেশির ভাগ টেলিফোন গ্রাহকের সংযোগ অচল। কারন মুঠোফোন চালুর পর থেকে টেলিফোনের ব্যবহার কমতে কমতে শূন্যের কোঠায় এসে দাঁড়িয়েছে। এবং সরকারি-বেসরকারি অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সমূহে টেলিফোনের ব্যবহার নেই বললেই চলে।
টিএনটির গ্রাহক উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সেতারুজ্জামান জানান, দুই বছর আমার অফিসের সংযোগ বন্ধ ছিল। এ ব্যাপারে আমি টিএনটি অফিসের লোকজকে জিজ্ঞেস করলে তারা সঠিক উত্তর দেয়নি। কিছুদিন হয় আবারো সংযোগ চালু করে দিয়ে গেছে। গেল দুই বছরে আমার মোবাইলে অনেক টাকা গচ্ছা গেছে।
এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে কুমিল্লা এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মো. কামরুজ্জামান এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ১৬টি উপজেলার দায়িত্বে আছি। লোকবলের অভাবে আমরা কিছুই করতে পারছিনা। আমার তিতাস অফিসে আমাকে ছাড়া আছে মাত্র একজন অপারেটর। আমার অনুপস্থিতিতে সে অফিস ও মাঠে কাজ করে। আমরা সরকারের কর্মচারী মাত্র। কতৃপক্ষ যদি কাজ না করে আমাদের কিছুই করার থাকেনা। তার পরেও আমরা বিল্ডিংয়ের রঙের কাজ ও সাইনবোর্ড লাগানোর জন্য আবেদন করেছি কতৃপক্ষের কাছে। আমার জানা মতে তিতাস উপজেলায় আনুমানিক ৪২ টি টেলিফোন সংযোগ আছে যা অতি সামান্য। তবে কেউ যদি নতুন সংযোগ নিতে চায় তাহলে আমাদের অফিসে যোগাযোগ করলে আমরা অবশ্যই দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম মোর্শেদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
CJ/zahid
আপনার মতামত লিখুন :