মো: জুয়েল রানা, তিতাস||
কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় বাবা-মায়ের ভরণপোষণ নিয়ে দুই ছেলের মোবাইল ফোনে ঝগড়া দেখে মা মঞ্জুরা বেগম (৬৫) দাঁড়ানো থেকে ডলে পরেন মাটিতে। এসময় পরিবারের সদস্যরা তাৎক্ষণিক তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন এবং নিহতের পরিবারের স্বজনদের নিকট লাশ বুঝিয়ে দেন। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (১৯ জুন) রাত আনুমানিক দশটায় উপজেলার সাতানী ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের শান্তি মিয়ার বাড়িতে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা শান্তি মিয়া ও মঞ্জুরা বেগম দম্পতির দুই ছেলে তিন মেয়ে। বড় ছেলে নবীর হোসেন ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করেন এবং ছোট ছেলে বাবুল হোসেন বাহরাইন প্রবাসী। বাবা-মায়ের ভরণপোষণ নিয়ে বেশ কয়েকদিন যাবৎ দুই ভাইয়ের মধ্যে দেশ বিদেশে মোবাইল ফোনে ঝগড়া চলে আসছিল। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রাতে পুনরায় আবারও দুই ভাই বাবা-মাকে নিয়ে মোবাইল ফোনে ঝগড়া করে। এসময় বৃদ্ধা মা মঞ্জুরা বেগম ছেলেদের এমন ঝগড়া দেখে স্বামী শান্তি মিয়ার সামনেই মাটিতে ঢলে পড়েন। পরে মঞ্জুরা বেগমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসক ও এলাকাবাসী ধারণা করছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছে মঞ্জুরা বেগম। তবে এদিকে এই মৃত্যুর ঘটনাকে হত্যা মামলায় রূপান্তর করতে ছেলের হাতে মা খুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন পোস্ট দিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে একটি দুষ্ট চক্র। ছেলের হাতে মা খুন এমন খবর পেয়ে তিতাস থানা পুলিশ বুধবার সকালে নিহতের বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন এবং একটি অপমৃত্যু মামলা রুজু করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মর্গে পাঠিয়েছেন।
নিহতের ছোট মেয়ে ফাতেমা আক্তার বলেন, আমার বাবা মায়ের মাসিক খাবার নিয়ে বড় ভাই ও ছোট ভাই প্রায় সময়ই ঝগড়া করতো। গতকাল মঙ্গলবার রাতেও দুই ভাই মোবাইল ফোনে ঝগড়া করার সময় বাবা-মা দুইজনই দাঁড়ানো ছিল, হঠাৎ মা ডলে পরেন মাটিতে। তাৎক্ষণিক আমরা মাথায় পানি ঢেলে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়াও ফাতেমা আরও বলেন, তার মা আগে থেকেই ডায়েবিটিস ও হার্টের রোগী। আমার ভাই মাকে খুন করেছে এমন মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যারা ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে আমার বৃদ্ধা মাকে কাটাছিড়া করিয়েছে তাদের বিচার যেনো আল্লাহ করেন। আমরা আল্লাহর নিকট এই বিচার চাই।
এবিষয়ে তিতাস থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাঞ্চন কান্তি দাস বলেন, নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি এবং পরিবারের পক্ষ থেকেও হত্যার অভিযোগ করেনি।তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :