• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৭ এপ্রিল, ২০২২
সর্বশেষ আপডেট : ৭ এপ্রিল, ২০২২
Designed by Nagorikit.com

মায়ের দেয়া ৪০ হাজার টাকা মূলধনই বদলে যায় ভাগ্য রাসেলের

কুমিল্লা জার্নাল

 

রুবেল মজুমদার ।।

কৃষিকাজ করেও যে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করা যায়,তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার মার্স্টাস পড়ুয়া শিক্ষার্থী রাসেল আহমেদ। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক সম্মান লাভ করে কয়েক বছর ধরে চাকরির জন্য ঘুরতে ঘুরতে যখন ক্লান্ত,ঠিক তখনি নিজ এলাকার এক বড় ভাইয়ের অনুপ্রেরণা ৪০ শতক জমি বর্গা নিয়ে টমেটো চাষ শুরু করেন ।

 

টমেটো চাষ করে সফলতা পেয়ে সচ্ছলতা এসেছে রাসেলের পরিবারে। পরিবার চার বোন দুই ভাইয়ের মাঝে সবার বড় তিনি।দুই ভাই পড়ালেখা করছেন। জেলার চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের পানিপাড়া গ্রামে মাঠজুড়ে দৃষ্টিনন্দন টমেটো খেত তার। সারিবদ্ধ টমেটো গাছের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত থোকা থোকা টমেটো শোভা পাচ্ছে। অনেকেই আবার তার টমেটো খেত দেখতে আসছেন। খেতে দাঁড়িয়ে কথা হয় টমেটো চাষি রাসেল আহমেদ সঙ্গে।

তিনি জানান,নিজের কোনো আবাদি জমি নেই। করোনাকালীন ২০২০ সালে মায়ের দেওয়ার ৪০ হাজার টাকা নিয়ে ৪০ শতক জমি বর্গা নিয়ে প্রথম টমেটো চাষ করেন, প্রথম বছর তার ১লক্ষ টাকা বিক্রি করে লাভ হয় ৬০ হাজার টাকা।পরের বছর ২০২১ সালে আবার ও ৪০ শতক জমিতে আবাদ করেন তিনগুন লাভের মুখ দেখেন।

বছরের অগ্রহায়ন ও পৌষ মাসে টমেটোর চারা রোপন করেন। এ বছর তিনি ৪০ একর জমিতে আগাম জাতের টমোটো চাষ করেছেন। আড়ৎদার কাছে প্রতি কেজি টমেটো এখন গড়ে ২৫/৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা টমেটো এখন বাজারে পাওয়া গেলেও তার খেতের টমেটোর চাহিদা বেশি পাইকারদের কাছে। এবছর খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। এরইমধ্যে বাজারজাতকরণ শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত ৭৫ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। তিনি আশা করছেন,এখন দাম কিছুটা কম হলেও জমিতে যে পরিমাণ টমেটো আছে, তাতে বাজার মূল্য ঠিক থাকলে আরও লাখ টাকা পাওয়া যাবে।

 

রাসেল আহমেদ জানান,করোনাকালীন চাকুরী পরীক্ষা দিতে দিতে পরিবারে জামানো সব টাকা শেষ হয়ে যায়,একসময় হতাশ হয়ে যান,পরিবারে বড় সন্তান হাওয়ার জীবনের সাথে যুদ্ধ করছি ছোটবেলা থেকে। এক বড় ভাইয়ের অনুপ্রেরণা ও মায়ের সহযোগিতা টমেটো চাষে আমার পরিবারের ভাগ্য পরিবর্তন হয়েছে। সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা পেলে উৎপাদন আরও বাড়াতে পারবো। সরকারি কোনে সহযোগিতা পেলে ভবিষৎতে ১০০ শতকের টমেটো চাষ করতে চায় ।

কুমিল্লা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ মিজানুর রহমান বলেন,অধ্যবসায় ও পরিশ্রম দিয়ে যে কেউ নিজের ভাগ্য বদলাতে পারে রাসেল তারই প্রমাণ। চাষিরা যাতে আগাম সবজি চাষ করে লাভবান হতে পারেন সেজন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে প্রচারণা চালানো হয়।

আরও পড়ুন

  • কুমিল্লা এর আরও খবর