হোসাইন মোহাম্মদ দিদার :
ভূমন্ডলে কেউ কারো নয় আবার যেনো সকলেই সকলের।
কারো ব্যথায় যদি কেউ ব্যথিত হয় সেটাকেই হয়তো মানবিকতা বলে। আবার কারো ব্যথায় যদি কেউ আনন্দ পায় সেটাকে কী বলে?
একজন পথহারা পথিকের পথের খবর,একজন দিশেহারা পথিকের পথের খবর,একজন উদাসীন পথিকের মনের খবর জানাতে আমার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে কল আসলো সাংবাদিক লিটন সরকার বাদল দাদার।
তিনি বললেন —দ্রুত আসো।
আমি পাঁচ মিনিটের ব্যবাধানে ওনার সাথে দেখা করি।
সন্ধ্যা তখন ৭টা।
ঘরির কাটা থেমে নেই,চলছে অবিরাম।
দাদার সাথে দেখা হবার পর টগবগে এক যুবকের সাথে পরিচয় করালেন । মুখে দাড়ি, অপলক চাহনি আর উদাসীনতা যুবককে বুঝতে আমার আর বাকী ছিলো না।
তবুও সাংবাদিক লিটন দাদা আমাকে বিস্তারিত জানালেন।
আমার ঘোর কাটছে না,সরাসরি কথোপকথনে জানতে পারলাম—
রবিউল নামের এই যুবক যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে সিভিল সাবজেক্টে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করেছে। বাড়িঘর নেই,ভিটেমাটি বলতেও সম্বল নেই। অসুস্থ মা ও বোনকে নিয়ে থাকেন মাগুরা সদরে।
ধারদেনায় জর্জরিত হয়ে বাড়ন্ত জীবন থেমে গেছে এই যুবকের সম্ভাবনার পথ! হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন, শেষ ভরসা হিসেবে নিজে আত্মহত্যা পথ বেচে নিতে চাচ্ছেন, এটাই তার কাছে সমাধান। মাত্র ১০-১৫ হাজার টাকার জন্য একটি নিষ্পাপ প্রাণ অকালে ঝরে যাবে
এটা মেনে নিতে পারছিলেন না সাংবাদিক লিটন সরকার বাদল দাদা। আমার জানামতে তিনি (লিটন দাদা) একজন প্রকৃত মানবিক মনের মানুষ।
প্রায় দুই যুগধরে এই মানুষটাকে কাজ থেকে দেখছি,দেখছি কীভাবে তিনি মানুষের বিপদে ঝাপিয়ে পড়েন,ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষকে আপন করে নেওয়াই তার সহজ স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য।
আমার সাথে কথা বলে উদ্যোগ নেয়া হয় কিভাবে তাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা যায়। দাউদকান্দি মডেল থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম ও লিটন সরকার বাদল দাদা’র চেষ্টা চলছে এই যুবককে আর্থিক সহযোগিতা করার জন্য । মানবিক সংগঠন ও বিত্তবানরা এই তরুণ যুবককে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ থাকল।
পাশাপাশি যদি কেউ পারেন তাকে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দিন।
পরিবারে কেবল মা ও বোনকে নিয়ে সে এখন নিরুপায়, কাঁধ চেপে ধরেছে দেনার টাকা।
এদিকে বাড়ি ভাড়া বকেয়া হয়েছে ৬ মাসের।
মা— হৃদ রোগে আক্রান্ত, মায়ের চিকিৎসা করাতে পারছে না টাকার অভাবে।
চোখে মুখে সবই আধার দেখছে যুবক। কী করিবে কোথায় যাবে।
এই ভাবনা তার রাত কাটে না, মা অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করিয়েছে।
কিন্তু সে চাকরি পাচ্ছে না,কোথায়ও চাকরি পেলে হয়তো কষ্টটা আলোর মুখ দেখতো।
দীর্ঘ কাউন্সিলিং শেষে যুবককে আত্মহত্যার পথ থেকে ফেরালেন সাংবাদিক লিটন সরকার বাদল দাদা, তবে আত্মহত্যা কিন্তু মূলত কোনো সঠিক সমাধান নয়।
সকলের নিজ নিজ ধর্মেই আত্মহত্যা মহাপাপ!
তবুও কেনো জানি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজকাল অনেকেই জীবনের মায়া ত্যাগ করে আত্মহত্যা করে থাকেন। তা মোটেও আমার বোধগম্য নয়।
জীবনে লড়াই করে টিকে থাকার নামই জীবনে, আত্মহত্যা করে নিজের যেমন ক্ষতি করছেন তেমনি পরিবারের সদস্যদের ঠেলে দিচ্ছেন মহাবিপদের দিকে।
তাই আত্মহত্যা থেকে বিরত থাকুন, স্বস্ব ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুন।
আপনার মতামত লিখুন :