নিজস্ব প্রতিবেদক।।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার এমপি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে ২৩ বছরের রাজনৈতিক জীবনে ১৪ বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। তিনি হিন্দু বৌদ্ধ মুসলিম নয়, বাঙালি জাতিকে মুক্তি দিয়েছেন। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশে গড়াই ছিল বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য। আমি বঙ্গবন্ধুর কর্মী, শেখ হাসিনার কর্মী। সামপ্রদায়িক চেতনা নিয়ে কেউ আওয়ামী লীগ করতে পারেন না। আমি বিশ্বাস করি, রাষ্ট্র সবার, ধর্ম যার যার। দীর্য ৫০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে দলমত ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে কুমিল্লার মানুষের জন্য কাজ করেছি। গত ৪ অক্টোবর কুমিল্লা জেলা প্রশাসক পূজা উদযাপন নিয়ে একটি সভা ডেকেছিল । আমি সেই সভায় বলেছিলাম, মাদকমুক্ত পূজা চাই। মদ খেয়ে পূজা মণ্ডপে কেউ আসতে পারবে না। আমি মাদকমুক্ত শুধু পূজা নয়, সেদিন আমি আরও বলেছিলাম, আমি মাদকমুক্ত কুমিল্লা মহানগর গড়তে চাই। চাঁদাবাজমুক্ত কুমিল্লা গড়তে চাই। ইভটিজিং মুক্ত কুমিল্লা গড়তে চাই। সন্ত্রাসমুক্ত কুমিল্লা গড়তে চাই। মদ নিষিদ্ধ করার কথা বলায় নাকি হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে। তারা বলছে আমি নাকি সাম্প্রদায়িক। যারা হিন্দু সম্পতি দখল করে খেয়েছে, শংকরের মাথা কেটে নিয়েছে তারা আজকে হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের সাথে মিলে কুমিল্লায় নতুন করে চক্রান্তে নেমেছে। কোন রকম ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। প্রবীর কে হত্যা করা হয়েছিল পূজা মণ্ডপে। তাই পূজা মণ্ডপের সম্মান রক্ষায় মদ মুক্ত পূজার কথা বলেছিলাম।
৫০ বছরের রাজনীতিতে অনেক জানাজার পাশাপাশি দাহতেও গিয়েছি। কুমিল্লার একজন মুসলমান মারা গেলে যেমন জানাযায় গিয়েছি। হিন্দুদের দাহতে গিয়েছি। সকল পূজায় নেতা-কর্মীদের নিয়ে পাহারাদারের দায়িত্ব পালন করেছি। বাবরী মসজিদ নিয়ে যখন গন্ডগোল হয় সেদিন নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে মন্দির পাহারা দিয়েছি। টিক্কাচরে কবরস্থান ও শশ্মানের জায়গা নিয়ে সমস্যা ছিল তা সমাধান করে দিয়েছি। এমপি হওয়ার পর কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে টিক্কাচর শশ্মানের উন্নয়ন করেছি। ঠাকুরপাড়ায় শ্মশানে আমাকে গুলি করা হয়েছিল। যখন শ্যামল চন্দ্রের বাবা ননী চন্দ্রের রক্তের প্রয়োজন হয়েছিল আমার গায়ের রক্ত দিয়ে দিয়ে তাকে বাঁচিয়েছিলাম। মারা যাওয়ার পর তার লাশ কাঁধে নিয়ে শশ্মানে গিয়েছি। সেদিন হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের কাউকে দেখেনি। ১৩ তারিখ নাকি তারা কুমিল্লায় কর্মসূচি দিয়েছে। কুমিল্লার হিন্দুরা যদি কর্মসূচি পালন করেন কোন আপত্তি নেই। কিন্তু বাহির হইতে ভাড়া করে লোক আনলে প্রতিহত করা হবে। ছাড় দেওয়া হবে না। শান্তির কুমিল্লাকে অশান্ত করতে দেওয়া হবে না। কুমিল্লার হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদ উপমহাদেশের নেতা মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতি বিজড়িত অভয় আশ্রম বিক্রি করে দিতে চেয়েছিল। আমি বাঁধা দেওয়ায় বিক্রি করতে পারেনি। তারাই আমার অংশবিশেষ বক্তব্য বিকৃত করে চক্রান্ত করছে।
গতকাল বুধবার (১১অক্টোবর) রাতে নগরীর শুভপুর ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত কুমিল্লা মহানগর ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ত্রি বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার এমপি এসব কথা বলেন।
হাজী বাহার এমপি আরও বলেন,
শেখ হাসিনা আমাদের জাতির মাথা উঁচু করে দিয়েছেন। আমরা এখন আর মিসকিনের জাতি নয়। বরং যাদের কাছ থেকে আমরা স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি সেই পাকিস্তান আজ অকার্যকর মিসকিন জাতিতে পরিণত হয়েছে। সৌদি আরবের মানুষ এক সময় বাঙালীদের মিসকিন বলতো, আর এখন বলে সাদিক (বন্ধু)।
আপনার মতামত লিখুন :