তাসনিম আক্তার মীম
স্বাধীনতার অর্ধশত পর ভাবছি, এখন কি লিখবো
স্বাধীন মানুষের বিচিত্র রূপ আমি কি আপনাদের কাছে তুলে ধরব?
স্বাধীনতার চেতনা ছিল সুশৃংখল, শান্তিময় সোনার বাংলা গড়ে তুলবার,
অর্ধশত বছর পরেও তবে কেন আজও চতুর্দিকে শুধু হাহাকার!
খবরের কাগজ খুললেই দেখতে পাই নারীরা নির্যাতিত,
পাঁচ ছয় বৎসরের শিশু প্রতিদিন প্রতিনিয়ত ধর্ষিতা। স্বাধীনতার চেতনা ছিল দেশের প্রতিটি নারীর নিরাপদভাবে বেঁচে থাকার স্বাধীনতা,
স্বপ্নে ভরা সোনার বাংলার যুগেও কেন আজ এত নারী এত শিশু ধর্ষিতা?
আজও কেন হবে আমার দেশের নারী, শিশু এত বেশি লাঞ্ছিতা!
পাক শাসককে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর জন্যই কি প্রতিদিন নারী ধর্ষিত হচ্ছে?
নাকি বাঙালি স্বাধীনতার চেতনার কথা দিন দিন ভুলে যাচ্ছে!
পাকসেনাদের নারী নির্যাতনকেও হার মানিয়ে দিয়েছে বিগত বছরের শিশু ধর্ষণ,
তনু, নুসরাতের মত অবুজ কিশোরীরা ওই পাষণ্ড জালিমদের হাতে অকালে দিয়েছে জীবন!
এটাই কি সোনার দেশের সোনার মানুষের ভূষণ?
এক বেদনাক্লিষ্ট ধর্ষিতা নারী চিৎকার করে বলছে –
আমাকে আশ্রয় দেওয়ার মতো নেই কি কোন ছাতা!
আবারও মনে করিয়ে দিলো পাক শাসনামলের নারী নির্যাতনের সেই ইতিকথা।
জীর্ণ কুড়ের ঘরে বসে এক অবলা নারী কাঁদছে,
আর এক দুখিনী নারী করুণ আর্তনাদ কন্ঠে বলছে-
পাক হানাদার বাহিনী নারীদের বানিয়েছিল প্রায় পতিতা,
ঐ পাষন্ড পাক শাসনামলেও আমি দেখতে পাই নি কোনো শিশু ধর্ষিতা!
স্বাধীনতার চেতনা ছিল প্রতিটি মানুষের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা,
তবে কেন আজ বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদকে ঐ ২৫জন মানুষরূপী পশুদের কাছে সমাপ্ত করতে হলো নিজের জীবদ্দশা!
স্বাধীনভাবে নিজের মতামত জানানোটাই কি ছিলো তার বড় অপরাধ?
সেদিন বাসের ভাড়া বেশি নেওয়ার কারনে প্রতিবাদ জানিয়েছিল বেগম বদরুন্নেসা কলেজের এক ছাত্রী,
বাসচালক কর্তৃক সে পেল ধর্ষণের সরাসরি হুমকি!
কোথায় আছে স্বাধীনতার সেই চেতনা!
কোথায় আছে আমাদের মেয়েদের নিরাপত্তা?
দূরে অদূরে শোনতে পাই আর্তমানবতার চিৎকার,
সব উড়িয়ে দেয় বুর্জুয়াদের ফুৎকার।
চারিদিকে চাঁদাবাজি, রাহাজানি, সন্ত্রাস আর খুন
এ কথা ভাবতে গেলে আতংকে ভরে ওঠে আমার মতো ক্ষুদ্র লেখিকার বুক!
স্বাধীনতার এক ঝাঁক স্বপ্নেভরা চেতনা,
সব স্বপ্ন মুছে দিয়ে কেন জন্ম নিবে এতো দুঃখ বেদনা।
স্বাধীনতার সেই চেতনা আবারও বাঙালি
আপনার মতামত লিখুন :