• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
সর্বশেষ আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
Designed by Nagorikit.com

নীল ময়ূরের অসাধারণ খামার গড়ে তুলেছেন শাহ আলী

কুমিল্লা জার্নাল
[sharethis-inline-buttons]

মাহফুজ নান্টু । ।

পেখম তুলে নাচছে, কোনটা আবার সঙ্গীর সাথে কুট কুট করে খাবার খাচ্ছে। কোনটা আবার ডানা ঝাপটে উড়ার চেষ্টা করছে। শতাধিক ময়ুরের এমন নাচ ও দলবেঁধে ঘুরার দৃশ্য কুমিল্লার হোমনায় দেখা যায়।
কুমিল্লা হোমনা উপজেলার বাবরকান্দি গ্রামের যুবক শাহ আলী। শখের বসে একজোড়া ময়ুর কিনেছিলেন। এখন সেই একজোড়া ময়ুর থেকে বাণিজ্যিক খামার গড়ে তুলেছেন। ময়ুর বিক্রি করে নিজের ও পরিবারের স্বচ্ছলতা এনেছেন। স্বপ্ন দেখছেন খামারটিকে আরো বড় করবেন।
২০১৯ সালের শেষের দিকের ঘটনা। সেই সময় নিজের জমানো টাকায় একজোড়া ময়ুর কিনেন। ওই ময়ুর জোড়ার দাম ছিলো ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।
ওই একজোড়া ময়ুর প্রথমে ২৪ টি ডিম দেয়। সেখান থেকে ১৭ টি বাচ্চা হয়। এগুলো লালন পালনের জন্য ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি শেড নির্মাণ করেন।
২০২০ সালের শেষের দিকে তার খামার থেকে ময়ুর বিক্রি শুরু করেন। একজোড়া ময়ুর ৫০ হাজার থেকে একলাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন। ২০২০-২০২১ সালে ২০ লাখ টাকার ময়ুর বিক্রি করেছেন। খরচ বাদে তার মুনাফা হয়েছে ১০ লাখ টাকা।
বর্তমানে খামারে এখন ১০৫ টি ময়ুর আছে। যার বাজার মূল্য ৩০ লাখ টাকা। তবে এগুলো ছোট এবং বেশ কয়েকটা ডিম দিবে। চলতি বছর জুন জুলাই মাসের দিকে বেঁচা বিক্রি শুরু করবেন।
ময়ুর কি খায় এবং এই ময়ুর কারা ক্রয় করে এমন প্রশ্নে শাহ আলী জানান, ময়ুর সাধারণত নরম ঘাস খায়। এছাড়া মুরগির জন্য যেসব দানাদার খাবার বাজারে পাওয়া যায় সেসব খাবার খায়। আমার ফার্মের পাশে কৃষি জমিতে প্রচুর সবুজ ঘাস জন্মে। সেগুলো তুলে এনে ময়ুরকে খেতে দেই।
মূলত যারা শৌখিন লোক বা শিল্পপতি যারা আছেন তারা ময়ুর ক্রয় করে বাসায় নিয়ে যান। তাদের ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানায় লালন পালন করেন।
খামার নিয়ে ভবিষ্যতে কি পরিকল্পনা আছে এমন প্রশ্নে শাহ আলী বলেন, আমার খামারে এখন ভেড়া ও তিতিরপাখি আছে। তবে যেহেতু কম খরচে ময়ুর লালন পালন করা যায় এবং মুনাফাও ভালো হয় তাই আরো বড় করার পরিকল্পনা আছে।
ময়ুর পালনের জন্য কি প্রয়োজন এমন প্রশ্নে শাহ আলী বলেন, যারাই ময়ুর খামার করবে আমি মনে করি প্রথমে তাদের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। তারা হয় কোন খামারে স্বেচ্ছাশ্রম দিবে নয়তো নিজের বাসায় এক দুই জোড়া ময়ুর পালন করবে। তার বছর দুয়েক পরে খামার করলে ভালো করতে পারবে।
সবচেয়ে বড় কথা হলো, যখন আমি একলা থাকি তখন ময়ুর গুলোকে দেখি। এগুলো পেখম তুলে নাচে, গান গায়। আমার খুব ভালো লাগে। ময়ুর খুব ভীতু স্বভাবের প্রাণী। একটুতে ভয় পায়। তবে যখন আমি একা আসি ময়ুরের কাছে। তখন এগুলো আমার আশেপাশে ঘুরঘুর করে। আমার তখন অনেক ভালো লাগে।
ময়ুর খামার নিয়ে কুমিল্লা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডাঃ নজরুল ইসলাম বলেন, কুমিল্লাতে শাহ আলীর ময়ুর খামার ছাড়া আর কোন ময়ুর খামার নেই। নিঃসন্দেহে ময়ুর খামার একটি ভালো উদ্যোগ। আমরা তাকে সাধুবাদ জানাই। কোন বেকার যুবক যদি এমন উদ্যোগ নেয় আমরা তাকে স্বাগত জানাবো। প্রয়োজনীয় সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • অন্যান্য এর আরও খবর