• ঢাকা
  • শনিবার, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
সর্বশেষ আপডেট : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
Designed by Nagorikit.com

লাগামহীন পেঁয়াজ,চড়া মিনিকেট চালের বাজার

কুমিল্লা জার্নাল
[sharethis-inline-buttons]

নিজস্ব প্রতিবেদক।

কয়েক দিনের ব্যবধানে লাগামহীন হয়ে পড়েছে পেঁয়াজের বাজার। গত সপ্তাহে প্রতি কেজিতে পাঁচ টাকা বাড়লেও এ সপ্তাহে ১০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা।

আগের সপ্তাহে কম দামে ভোজ্যতেল বিক্রি করা হলেও বর্তমানে বাড়তি মূল্যে ২ লিটার ৩১৬ টাকা, ৫ লিটার ৭৮৫ টাকা বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তেল, পেঁয়াজের ঝাঁজে ভোক্তারা অতিষ্ঠ। এছাড়া ডিমের ডজনে পাঁচ টাকা, মিনিকেট চালের কেজিতে এক টাকা বেড়ে গেছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে ডাল, মাছ, মুরগি, খাসি ও গরুর মাংস, আলু, বেগুনসহ বিভিন্ন সবজির দাম বাড়েনি।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

 

চালের দাম নিয়ে বহু আলোচনা-সমালোচনা হলেও কমছে না দাম। গত সপ্তাহে না বাড়লেও এ সপ্তাহে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে এক টাকা বেড়ে পাইকারি ৬৩ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের মেসার্স কুমিল্লা রাইস এজেন্সির মো. আবুল কাসেম ঢাকাপ্রকাশকে জানান, আগের সপ্তাহে না বাড়লেও বৃহস্পতিবার মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৩ টাকা, বিআর-২৮ কেজি ৪৭ থেকে ৪৯ টাকা, পারিজা ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। একই কথা জানান চাটখিল রাইস এজেন্সির বেলাল হোসেন। তিনি বলেন, আগের দামেই মিনিকেট ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, আটাশ ৪৮ থেকে ৪৯, নাজির চাল ৬৯ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে একই চাল বিভিন্ন বাজারে পাইকারির চেয়ে চার থেকে পাঁচ টাকা বেশি দামে খুচরা বাজারে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা।

বাড়তি দামে ১৬৮ টাকা লিটার সয়াবিন তেল

সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে মিল মালিকরা প্রতি লিটার তেলের দাম বাড়িয়েছেন আট টাকা। আগের সপ্তাহে কম দামে ৫ লিটার ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকা বিক্রি করা হলেও আজ থেকে সব কোম্পানির তেল বেশি দামে খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন। কারওয়ান বাজারের নিউ সোনারগাঁও জেনারেল স্টোরের রিপন বলেন, ‘আগে কম দামে বিক্রি করা হলেও বর্তমানে পাঁচ লিটার ভোজ্যতেল ৭৫০ থেকে ৭৮৫ টাকা, ২ লিটার ৩২০ টাকা, এক লিটার ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।

স্থিতিশীল ডাল-চিনি-আটার দাম

এ সপ্তাহে বাড়েনি আটা, চিনি, ছোলাসহ অন্যান্য জিনিসের দাম। সব পণ্যই আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। ইউসুফ জেনারেল স্টোরের সুজন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘চিনি ৭৫ টাকা কেজি, দুই কেজি আটা ৮০ টাকা, ডাল ৯০ থেকে ১১০, ছোলা ৭০ টাকা কেজিসহ বিভিন্ন মসলা আগের দামেই বিক্রি করা হচ্ছে।

গরু-খাসির মাংসের দাম স্থিতিশীল

গত সপ্তাহের মতো গরু ও খাসির মাংসের দাম এ সপ্তাহেও স্থিতিশীল। কারওয়ান বাজারের ‘জনপ্রিয় খাসির মাংসের’ দোকানের নুরুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, আগের সপ্তাহের মতোই এ সপ্তাহে ৯৩০ থেকে ৯৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। গরুর মাংসের দাম ৬০০ টাকা কেজি। তবে বেশি কিনলে একটু কম দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। কারওয়ান বাজারের মেসার্স খোকন এন্টারপ্রাইজের জালাল বলেন, ‘দুই সপ্তাহ থেকে ৬২০ টাকা লেখা থাকলেও ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে গরুর মাংস। এর কমে বিক্রি করা সম্ভব নয়।’

ডিমের দাম বাড়লেও স্থিতিশীল মুরগি-মাছের দাম

আগের সপ্তাহে ডিমের ডজন সর্বোচ্চ ১০৫ টাকা বিক্রি করা হলেও এখন ১১০ টাকা ডজন বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। ইদ্রিস জানান, ‘বেশি দামে কেনা। তাই বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে আগের দামেই মুরগি বিক্রি হচ্ছে। জানতে চাইলে জননী মুরগির আড়তের আব্দুল ওহাব ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘দেশি মুরগি আগের দামেই ৪৫০ টাকা কেজি, ব্রয়লার ১৫০ থেকে ১৬০ কেজি ও পাকিস্তানি কর্ক ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।’

এদিকে আগের সপ্তাহের মতোই মাছের বাজার স্থিতিশীল বলে বিক্রেতারা জানান। কারওয়ান বাজারের মাছ ব্যবসায়ী এনামুল বলেন, আকারভেদে রুই ও কাতলা ২০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি, চিংড়ি আকারভেদে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, চাষের শিং মাছ ৩০০, দেশি শিং ৬০০-৭০০ টাকা, চাষের কই ৩০০ টাকা ও দেশি ৫০০ টাকা, দেশি শোল ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা এবং আইড় মাছ আকারভেদে ৪০০ থেকে ১২০০ টাকা, ইলিশ মাছ ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।

পেঁয়াজের মতো বাড়ছে টমেটো-গাঁজরের দাম

আলু পাইকারি বাজারে ৬০ থেকে ৭০ টাকা পাল্লা বা ১২ থেকে ১৪ টাকা কেজি বিক্রি করা হলেও খুচরা বাজারে তা ১৭ থেকে ২০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।

তবে গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বাড়লেও আজ তা ১০ টাকা বেড়ে ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা পাল্লা বা ৪৮ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। মতলব বাণিজ্যালয়ের করিম বলেন, ‘গত সপ্তাহে প্রতি পাল্লা পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি করা হয়েছে। সেই পেঁয়াজ এখন ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। দাম বাড়ার কারণ কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মোকামে বেশি দামে কেনা তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। এখানো সব পেঁয়াজ উঠেনি। তাই কমবে না দাম।’ এ সময় আইয়ুব নামে এক ক্রেতা হকচকিয়ে বলেন, ‘কি বলেন। কিসের কারণে এতো বেশি দাম। সব জিনিসের দাম এভাবে বাড়লে আমরা চলব কিভাবে?’ তবে আগের মতোই দেশি রসুন কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকা ও চায়না রসুন ১২০ টাকা, দেশি আদা ৯০ টাকা ও চায়না আদা ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

সবজির মধ্যে শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, বেগুন ৪০ থেকে ৫০, প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, মরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, শাকের আঁটি ৮ থেকে ১০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০ থেকে ৬০ টাকা পিস বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। তবে গাঁজরের দাম বেড়ে ৩০ টাকা, টমেটোর কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা ও মুলা ২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।

জেডএ/আরএ

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • অন্যান্য এর আরও খবর