• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১৯ আগস্ট, ২০২২
সর্বশেষ আপডেট : ১৯ আগস্ট, ২০২২
Designed by Nagorikit.com

কুমিল্লার বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রটি নিজেই আশ্রয়হীন!

কুমিল্লা জার্নাল

 

তিতাস প্রতিনিধি।

বর্ষার শুরুলগ্ন থেকেই পানি কবলিত থাকে আশ্রয়কেন্দ্রটি। স্কুল ভবনটি তিতাস নদীর তীরবর্তী হওয়ায় স্কুলের নিচে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রের উপর দিয়ে পাশ্ববর্তী ব্রিজে হয়ে প্রবল স্রোতের মাধ্যমে উঠানামা করছে প্রায় তিনটি গ্রামের চকের পানি। অহরহই আশ্রয়কেন্দ্রের উপর দিয়ে চলছে নৌকা।

কুমিল্লা তিতাস উপজেলা নারান্দিয়া ইউনিয়নে দুঃখিয়ারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিচে তলায় নির্মিত বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রটি নির্মাণের পর থেকেই তলিয়ে আছে পানির নিচে। এতে করে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোদ নিজেই যেন আশ্রয়ের খোঁজ করছে।২০১৩ সালে ৮৯ লক্ষধিক টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই স্কুল ভবনসহ আশ্রয়কেন্দ্র। আর এ ভবনটি নির্মাণ করেন মেসার্স ইভা ইঞ্জিনিয়ার্স। এ অবস্থায়ই প্রায় ৯ বছর ধরে বর্ষাকালের গভীর পানি আর প্রবল স্রোতের সাথে লড়াই করে দাঁড়িয়ে আছে এ ভবনটি।

১৮ আগস্ট(বৃহস্পতিবার )সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,কয়েকজন নারী রান্নাবান্নার পানি নিচ্ছেন ভবনের সিঁড়ি বেয়ে। কেউ কেউ আবার প্লাষ্টিকের পাইপ দিয়ে জমিনের পানি সড়াচ্ছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। এ যেন দেখার কেউ নেই। সাবমারস্যাবল টিউবওয়েলের পাইপ’টি পড়ে আছে অবহেলা আর অযত্নে এই পাইট’টি ঘেঁষে চলাচল করছে নৌকা। নৌকার ধাক্কায় যে কোন ভেঙে যেতে পারে পাইপ’টি। তাছাড়া ভবনের পেছনের রং উঠে যাচ্ছে, পানির উপর দাঁড়িয়ে থাকা পিলার গুলোর অস্তর ও রং উঠে যাচ্ছে এবং কিছু পিলারের কোনাগুলো ভাঙ্গা দেখা গেছে। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এমনটি হয়েছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
স্কুলটির প্রধান শিক্ষক রহিমা আক্তার বলেন, ৩ বছর আগে এক শিশু ভবনটির নিচে পানিতে ডুবে মারা গেছে। সেই কারনে বিদ্যালয়ে শিশু শিক্ষার্থীর উপস্থিতির সংখ্যা কমে গেছে। তাছাড়া প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীর চার ভাগের এক ভাগ আসে মাত্র। গার্জিয়ানদের ভয় প্রবল স্রোত আর গভীর পানিতে ডুবে তার শিশুটির যদি মারা যায়। ইঞ্জিনিয়ার কি ভেবে এই অপরিকল্পিতভাবে এই আশ্রয়কেন্দ্র নির্মান করল তা আমার বোধগম্য নয়। আমি এ বিষয়ে কমিটির সাথে কথা বলেছি কিন্তু কারো কোন সাড়া পাইনি। তাছাড়া প্রতিনিয়ত উপজেলা থেকে লোকজন এসে দেখে যায় কিন্তু এ নিয়ে কারো কোন মাথা ব্যাথা নাই।
বিদ্যালয়ের সভাপতি হাজী সরাফত আলী বলেন, আমরা আসলেই অসহায়। স্কুল ভবনটির নির্মাণের পর থেকেই এই অবস্থা চলমান। প্রবল স্রোতে নীচের মাটি সরে গিয়ে ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ ব্যপারে নারান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান (সাবেক) ই›িজনিয়ার সালাহউদ্দিন বলেছিলেন মাটি ভরাট করে দিবেন কিন্তু তিনি কথা রাখেননি।অতি দ্রুত স্কুল মাঠ ও আশ্রয়কেন্দ্র ভরাট না করা হলে শিশু শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দুর করা সম্ভব হবেনা।

এ বিষয় তিতাস উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা লায়লা পারভীন ভানু বলেন, এ ব্যাপারে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম মোর্শেদ মহোদয়ের সাথে ও স্কুল কমিটির সাথে আলোচনায় বসে আশানুরূপ ব্যাবস্থা নেব।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম মোর্শেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে বসে দেখি কি ব্যাবস্থা নেয়া যায়। তবে আমি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো.আব্দুল মান্নান বলেন এগুলো স্থানীয় সরকারের কাজ। তারা যদি এ কাজগুলো না করেন তা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয়। এবিষয়ে আমি ডিসি মহোদয়ের সাথে কথা বলব। মাটি ভরাটের কাজ আমাদের নয়। ইউপি থেকে জেলা পরিষদের কাজ।

 

কুমিল্লাজার্নাল/জাহিদ

আরও পড়ুন

  • কুমিল্লা এর আরও খবর