• ঢাকা
  • সোমবার, ১২ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১৩ জানুয়ারি, ২০২২
সর্বশেষ আপডেট : ১৩ জানুয়ারি, ২০২২
Designed by Nagorikit.com

কোটবাড়িতে প্রভাবশালীর বাড়ি বাঁচাতে  ৭০ ডিগ্রিতে ঘুরে গেল সড়ক!

কুমিল্লা জার্নাল
[sharethis-inline-buttons]
কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
কুমিল্লায় একটি ব্যক্তি মালিকানা বাড়ি বাঁচাতে নানান কূটকৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। কুমিল্লার কোটবাড়ি বিশ্বরোড থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, শালবন বিহার, বৌদ্ধ বিহার, সিসিএন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট,  ময়নামতি জাদুঘরসহ কুমিল্লার ঐতিহাসিক এবং ঐতিহ্যবাহী এ স্থানগুলোতে যাওয়া আসার একমাত্র সড়কটির নির্মাণ কাজে হাত দিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৩নং ওয়ার্ডের নন্দনপুরের ওই বাড়িটির রুটম্যাপ অনুযায়ী সিটি কর্পোরেশনের তত্ত্বাবধানে সড়কটির পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজ করা হয়। এই ড্রেনের কাজ করতে গিয়ে বহু নাটকীয়তা চলে। সড়কের নন্দনপুর গ্রামের “সরকার বাড়ি” এবং একটি বহুতল ভবনের অংশ চলে আসে রাস্তার উপর। ২১ ফিট প্রশস্ত সড়কটির ড্রেন খননের ম্যাপ অনুযায়ী বাড়িটি ভাঙা পড়ে। কিন্তু সেই বহুতল বাড়িটিকে ভাঙার হাত থেকে বাঁচাতে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এবং বাড়িটির মালিক রফিকুল ইসলাম সরকারের যোগসাজশে বাড়িটিকে বাঁচিয়ে প্ল্যান পরিবর্তন করে তা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে পাশ করে আনা হয়৷ বাড়িটির পূর্ব পাশের একটি মসজিদের সামনেও একই রকমের দৃশ্য দেখা গেছে।
শুধুমাত্র ড্রেন এর ম্যাপ ই নয়, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ওই বাড়িটির সামনের অংশে আরসিসি ঢালাইয়ের। পুরো সড়কটিতে পিচ ঢালাই হওয়ার কথা থাকলেও, শুধুমাত্র “সরকার বাড়ি”র সামনের অংশে আরসিসি ঢালাই হবে। এই ঢালাই কাজ সম্পন্ন করার জন্য আনা হয়েছে কংক্রিট। শীঘ্রই ঢালাই কাজ শুরু হবে। শুধুমাত্র একটি বাড়ি বাঁচাতে কেন এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির ২শ ফিট আরসিসি ঢালাই হবে, প্রশ্ন জনমনে। গত বর্ষায় এই জায়গাটিতে বৃষ্টির পানি আটকে মানুষের অন্তহীন ভোগান্তি সৃষ্টি করেছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বাড়ির মালিক রফিকুল ইসলাম সরকার মুঠোফোনে জানান, এখানে সরকারি কোনো জায়গা নেই, সড়কের পুরো অংশটি ব্যক্তি মালিকানা। আমি সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় প্ল্যান পাশ করিয়ে এনেছি। আপনারা চাইলে খোঁজ নিতে পারেন। রাস্তাটি ২১ ফুট প্রশস্ত হবে। তখন আর ড্রেন দেখা যাবে না বলেও তিনি জানান। এসময় তিনি বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করে জানান, প্রতিবেদনটি ১৬ তারিখের পরে ছাপাবেন, এটা আমার একটা অনুরোধ থাকলো।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ নুরুল্লাহ্ বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে এখনই জানতে পারলাম, আমি আমার ইঞ্জিনিয়ারদের ডেকেছি, তাদের কাছে এর বিষয়ে জানতে চাইবো।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতের মতো এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি যদি ব্যক্তি মালিকানা হয়েই থাকে, তবে সরকার কেন সে ভূমির মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে তার ভূমি অধিগ্রহনের মাধ্যমে আয়ত্তে নিতে পারে নি সে প্রশ্নটিও দেখা দিয়েছে বিভিন্ন মহলে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রেজা ই রাব্বী জানান, ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজটি সিটি কর্পোরেশন এর বিষয়। তাঁরা প্ল্যান পাশের মাধ্যমে ড্রেন খনন করে আমাদের কাছে সেই প্ল্যানের কপি দেওয়ার পর সড়কের নির্মাণ কাজে হাত দেওয়া হয়েছে। আর মূল সমস্যাটি হয়েছিল সিটি কর্পোরেশন ব্যক্তি মালিকানা সেই ভূমি অধিগ্রহন করতে পারেনি। তাই সেখানে আরসিসি ঢালাই দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রায় ৭০ ডিগ্রি এঙ্গেলে নির্মিত এই ড্রেনেজ ব্যবস্থার ফলে লালমাই পাহাড়ের ঢল এবং ওই এলাকার বর্ষণের পানি খালে গিয়ে পৌঁছাতে বাঁধাগ্রস্ত হবে। ড্রেনের কাজ সোজাসুজি না গিয়ে রাউন্ড এঙ্গেল হওয়ায় এই বাঁধায় পুরে ড্রেনেজ ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়তে পারে যেকোনো সময়।
[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • বৃহত্তর কুমিল্লা এর আরও খবর