লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি।
প্রায় চার শতাধিক লোকের চলাচলের একমাত্র ভরসা নড়বড়ে কাঠের সাঁকো। সাঁকোটি মেরামতের জন্য উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করেও কোনো ফল পাচ্ছেন না চলাচলকারীরা।
ফলে দীর্ঘদিন ধরে এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোর ওপর দিয়েই তাদের চলাচল করতে হচ্ছে।
এ পথে চলাচলকারী এক বৃদ্ধা বলেন, দোয়া-দরুদ পড়ে সাঁকোতে উঠি। অনেক কষ্ট হয় এ সাঁকো পার হতে। যেকোনো সময় পড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় থাকি। শিশুরাও খুব কষ্ট করে সাঁকো পার হয়।
সাঁকোটির অবস্থান লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার চর কালকিনি ইউনিয়নের মতিরহাট সংলগ্ন ‘জয়বাংলা’ খালের ওপর।
স্থানীয় লোকজন বাংলানিউজকে জানান, প্রায় চার শতাধিক বাসিন্দা চলাচল করছেন নড়বড়ে একটি কাঠের সাঁকোর ওপর দিয়ে। সাঁকোটি মেরামতে এগিয়ে আসেনি স্থানীয় জনপ্রতিনিরা। ফলে স্থানীয়রা নিজেদের প্রচেষ্টায় মাঝে মধ্যে সাঁকোটি মেরামত করে কোনোভাবে চলাচলের উপযোগী করে রাখছেন।
উপজেলা প্রশাসন কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সাঁকোটি পূর্ণাঙ্গ মেরামতের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এছাড়া স্থায়ীভাবে সমস্যা সমাধানে একটি ব্রিজ নির্মাণেরও দাবি করেছেন।
তারা জানান, নড়বড়ে সাঁকোর ওপর দিয়ে রিকশা বা সাইকেল কোনোটাই পার করা যায় না। ব্রিজ নির্মাণ করা হলে এসব বাহনগুলো অন্তত পার করা যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, মতিরহাট সংলগ্ন ‘জয়বাংলা’ খালের দক্ষিণ পাশে প্রায় দেড় শতাধিক পরিবারের চার শতাধিক লোকের বসবাস। এলাকাটি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত। বাসিন্দারা ‘বর্দারিয়া’ রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। রাস্তার উত্তর অংশে মেঘনা নদীর সংযোগ খাল ‘জয়বাংলা’ খালের ওপর তিন বছর আগে দেড় লাখ টাকা ব্যয়ে একশ’ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি কাঠের সাঁকো তৈরি করা হয়। এক বছরের মাথায় মেঘনা নদীর অতিরিক্ত জোয়ারের পানির তোড়ে সাঁকোটি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে। এছাড়া খাল ভাঙতে ভাঙতে এখন ১২০ দৈর্ঘ্য হয়েছে।
তিনি বলেন, বিধ্বস্ত সাঁকোটি ২২ হাজার টাকা ব্যয়ে কোনোভাবে মেরামত করা হয়। কিন্তু সাঁকোটি এখনো নড়বড়ে। ৫০ হাজার টাকা হলে পুরোপুরি মেরামত করা সম্ভব হবে। কিন্তু এ এলাকায় বেশিরভাগ মানুষ জেলে এবং কৃষক। তাদের পক্ষে এর ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয়।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সাঁকোটি মেরামতের জন্য উপজেলা পরিষদ এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাইনি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. খালেক বলেন, খালের ওপরে থাকা সাঁকো নড়বড়ে এবং রাস্তাটিও ভাঙাচোরা। আগে রাস্তা মেরামত করা হবে। পরে সাঁকো মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছয়েফ উল্যাহ বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয়রা তাদের অর্থায়নে সাঁকোটি মেরামত করে কোনোভাবে চলাচল করছে। পরিষদের বড় কোনো বাজেট না থাকায় বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি জানান, এখানে যেন একটি ব্রিজের বরাদ্দ দেওয়া হয় সে ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :